রবিবার, ১ মার্চ, ২০১৫

আত তাকবীর-81

আত তাকবীর-81
 
১.) যখন সূর্য গুটিয়ে নেয়া হবে।
 
২.) যখন তারকারা চারদিকে বিক্ষিপ্ত হয়ে যাবে।
 
৩.) যখন পাহাড়গুলোকে চলমান করা হবে।
 
৪.) যখন দশ মাসের গর্ভবতী উটনীগুলোকে তাদের অবস্থার ওপর ছেড়ে দেয়া হবে।
 
৫.) যখন বন্য পশুদের চারদিক থেকে এনে একত্র করা হবে।
 
৬.) যখন সমুদ্রগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হবে।
 
৭.) যখন প্রাণসমূহকে (দেহের সাথে) জুড়ে দেয়া হবে।
 
৮.) যখন জীবিত পুঁতে ফেলা মেয়েকে জিজ্ঞেস করা হবে,
 
৯.) কোন অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছে?
 
১০.) যখন আমলনামাসমূহ খুলে ধরা হবে।
 
১১.) যখন আকাশের পরদা সরিয়ে ফেলা হবে।১০
 
১২.) যখন জাহান্নামের আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হবে
 
১৩.) এবং জান্নাতকে নিকটে আনা হবে।১১
 
১৪.) সে সময় প্রত্যেক ব্যক্তি জানতে পারবে সে কি নিয়ে এসেছে।
 
১৫.) কাজেই, না,১২ আমি কসম খাচ্ছি
 
১৬.) পেছনে ফিরে আসা ও অদৃশ্য হয়ে যাওয়া তারকারাজির এবং রাত্রির,
 
১৭.) যখন তা বিদায় নিয়েছে
 
১৮.) এবং প্রভাতের, যখন তা শ্বাস ফেলেছে।১৩
 
১৯.) এটি প্রকৃতপক্ষে একজন সম্মানিত বাণীবাহকের বাণী,১৪
 
২০.) যিনি বড়ই শক্তিধর,১৫ আরশের মালিকের কাছে উন্নত মর্যাদার অধিকারী,
 
২১.) সেখানে তার হুকুম মেনে চলা হয়, ১৬ তিনি আস্থাভাজন।১৭
 
২২.) আর (হে মক্কাবাসীরা!) তোমাদের সাথী১৮ পাগল নয়।
 
২৩.) সেই বাণীবাহককে দেখেছে উজ্জ্বল দিগন্তে।১৯
 
২৪.) আর সে গায়েবের (এই জ্ঞান লোকদের কাছে পৌঁছানেরা) ব্যাপারে কৃপণ নয়।২০
 
২৫.) এটা কোন অভিশপ্ত শয়তানের বাক্য নয়।২১
 
২৬.) কাজেই তোমরা কোথায় চলে যাচ্ছো?
 
২৭.) এটা তো সারা জাহানের অধিবাসীদের জন্য একটা উপদেশ।
 
২৮.) তোমাদের মধ্য থেকে এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য, যে সত্য সরল পথে চলতে চায়।২২
 
২৯.) আর তোমাদের চাইলেই কিছু হয় না, যতক্ষণ না আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তা চান।২৩

নামকরণ

সূরার প্রথম বাক্যের كُوِرَتْ শব্দটি থেকে নামকরণ করা হয়েছে। তাকভীর (تَكْوِيْر) হচ্ছে মূল শব্দ। তা থেকে অতীত কালের কর্তৃবাচ্য অর্থে কুওভিরাত (كُوِرَتْ) শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। এর মানে হচ্ছে, গুটিয়ে ফেলা হয়েছে। এই নামকরণের অর্থ হচ্ছে, এটি সেই সূরা যার মধ্যে গুটিয়ে ফেলার কথা বলা হয়েছে।

নাযিলের সময়-কাল

বিষয়বস্তু ও বর্ণনাভংগী থেকে পরিষ্কারভাবে জানা যায়, এটি মক্কা মু’আযযমার প্রথম যুগের নাযিল হওয়া সূরাগুলোর অন্তর্ভুক্ত।

বিষয়বস্তু ও মুল বক্তব্য

এর বিষয়বস্তু হচ্ছে দু’টিঃ আখেরাত ও রিসালাত।
প্রথম ছ’টি আয়াতে কিয়ামতের প্রথম পর্বের উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছেঃ যখন সূর্য আলোহীন হয়ে পড়বে। তারকারা স্থানচ্যুত হয়ে ইতস্তত বিক্ষিপ্ত হবে। পাহাড়গুলো পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে উৎপাটিত হয়ে শূন্যে উড়তে থাকবে। মানুষ তাদের সবচেয়ে প্রিয় জিনিসের কথা ভুলে যাবে। বনের পশুরা আতংকিত ও দিশেহারা হয়ে সব এক জায়গায় জড়ো হয়ে যাবে। সমুদ্র স্ফীত হবে ও জ্বলে উঠবে। পরবর্তী সাতটি আয়াতে কিয়ামতের দ্বিতীয় পর্বের উল্লেখ করে বলা হয়েছেঃ যখন রূহগুলোকে আবার নতুন করে শরীরের সাথে সংযুক্ত করে দেয়া হবে। আমলনামা খুলে দেয়া হবে। অপরাধের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আকাশের সমস্ত পরদা সরে যাবে এবং জান্নাত- জাহান্নাম ইত্যাদি সব জিনিসই চোখের সামনে সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে। আখেরাতের এই ধরনের একটি পুরোপুরি ছবি আঁকার পর একথা বলে মানুষকে চিন্তা করার জন্য ছেড়ে দেয়া হয়েছে যে, সে সময় প্রত্যেক ব্যক্তি কি পাথেয় সংগ্রহ করে এনেছে তা সে নিজেই জানতে পারবে।
এরপর রিসালাত সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মক্কাবাসীদেরকে বলা হয়েছে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমাদের সামনে যা কিছু পেশ করছেন সেগুলো কোন পাগলের প্রলাপ নয়। কোন শয়তানের ওয়াসওয়াসা ও বিভ্রান্তিও নয়। বরং সেগুলো আল্লাহর প্রেরিত একজন উন্নত মর্যাদা সম্পন্ন বুযর্গ ও বিশ্বস্ত বাণীবাহকের বিবৃতি, যাঁকে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উন্মুক্ত আকাশের দিগন্তে দিনের উজ্জ্বল আলোয় নিজের চোখে দেখেছেন। এই শিক্ষা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে তোমরা কোন দিকে চলে যাচ্ছো?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন