রবিবার, ১ মার্চ, ২০১৫

আল ইনফিতার-82

আল ইনফিতার-82 
 
১.) যখন আকাশ ফেটে যাবে,
 
২.) যখন তারকারা চারদিকে বিক্ষিপ্ত হয়ে যাবে,
 
৩.) যখন সমুদ্র ফাটিয়ে ফেলা হবে
 
৪.) এবং যখন কবরগুলো খুলে ফেলা হবে,
 
৫.) তখন প্রত্যেক ব্যক্তি তার সামনের ও পেছনের সবকিছু জেনে যাবে।
 
৬.) হে মানুষ! কোন জিনিষ তোমাকে তোমার মহান রবের ব্যাপারে ধোঁকায় ফেলে রেখেছে,
 
৭.) যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন, তোমাকে সুঠাম ও সুসামঞ্জস্য করে গড়েছেন
 
৮.) এবং যে আকৃতিতে চেয়েছেন তোমাকে গঠন করেছেন।
 
৯.) কখ্খনো না, বরং (আসল কথা হচ্ছে এই যে), তোমরা শাস্তি ও পুরস্কারকে মিথ্যা মনে করছো।
 
১০.) অথচ তোমাদের ওপর পরিদর্শক নিযুক্ত রয়েছে,
 
১১.) এমন সম্মানিত লেখকবৃন্দ,
 
১২.) যারা তোমাদের প্রত্যেকটি কাজ জানে।
 
১৩.) নিঃসন্দেহে নেক লোকেরা পরমানন্দে থাকবে
 
১৪.) আর পাপীরা অবশ্যি যাবে জাহান্নামে।
 
১৫.) কর্মফলের দিন তারা তার মধ্যে প্রবেশ করবে
 
১৬.) এবং সেখান থেকে কোনক্রমেই সরে পড়তে পারবে না।
 
১৭.) আর তোমরা কি জানো, ঐ কর্মফল দিনটি কি?
 
১৮.) হ্যাঁ, তোমরা কি জানো, ঐ কর্মফল দিনটি কি?
 
১৯.) এটি সেই দিন যখন কারোর জন্য কোন কিছু করার সাধ্য কারোর থাকবে না। ফায়সালা সেদিন একমাত্র আল্লাহর ইখতিয়ারে থাকবে।

নামকরণঃ

প্রথম আয়াতের শব্দ (اِ نْفَطَرَتْ) থেকেই এর নামকরণ করা হয়েছে। এর মূলে রয়েছে ইনফিতার অর্থাৎ ফেটে যাওয়া। এ নামকরণের কারণ হচ্ছে এই যে, এ সূরায় আকাশের ফেটে যাওয়ার কথা আলোচনা করা হয়েছে।

নাযিলের সময়-কাল

এই সূরার ও সূরা আত্ তাকভীরের বিষয়বস্তুর মধ্যে গভীর মিল দেখা যায়। এ থেকে বুঝা যায়, এই সূরা দু’টি প্রায় একই সময়ে নাযিল হয়েছে।

বিষয়বস্তু ও মূল বক্তব্য

এর বিষয়বস্তু হচ্ছে আখেরাত। মুসনাদে আহমাদ, তিরমিযী, ইবনুল মন্‌যার, তাবারানী, হাকেম ও ইবনে মারদুইয়ায় হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমরের (রা.) একটি বর্ণনা উদ্ধৃত হয়েছে। তাতে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
আরবী------------------
“যে ব্যক্তি কিয়ামতের দিনটি নিজের চোখে দেখতে চায় সে যেন সূরা তাকভীর, সূরা ইনফিতার ও সূরা ইনশিকাক পড়ে নেয়।”
এখানে প্রথমে কিয়ামতের দিনের ছবি তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রত্যেক ব্যক্তি দুনিয়ায় যা কিছু করেছে কিয়ামতের দিন তা সবই তার সামনে উপস্থিত হবে। তারপর মানুষের মনে অনুভূতি জাগানো হয়েছে, যে সৃষ্টিকর্তা তোমাকে অস্তিত্ব দান করলেন এবং যাঁর অনুগ্রহে তুমি আজ সমস্ত সৃষ্ট জীবের মধ্যে সবচেয়ে ভালো শরীর ও অংগ- প্রত্যংগ সহকারে বিচরণ করছো, তিনি কেবল অনুগ্রহকারী ইনসাফকার নন, তাঁর সম্পর্কে তোমার মনে কে এই প্রতারণার জাল বিস্তার করলো ? তাঁর অনুগ্রহের অর্থ এ নয় যে, তুমি তাঁর ন্যায়নিষ্ঠ ব্যবহার ও বিচারের ভয় করবে না। তারপর মানুষকে সাবধান করে দেয়া হয়েছে, তুমি কোন ভুল ধারণা নিয়ে বসে থেকো না। তোমার পুরো আমলনামা তৈরী করা হচ্ছে। অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য লেখকরা সবসময় তোমার সমস্ত কথাবার্তা, ওঠাবসা, চলাফেরা ও যাবতীয় কাজকর্ম লিখে চলছেন। সবশেষে পূর্ণ দৃঢ়তা সহকারে বলা হয়েছে, অবশ্যিই একদিন কিয়ামত হবে। সেদিন নেককার লোকেরা জান্নাতে সুখের জীবন লাভ করবে এবং পাপীরা জাহান্নামের আযাব ভোগ করবে। সেদিন কেউ কারোর কোন কাজে লাগবে না। বিচার ও ফায়সালাকারী সেদিন হবেন একমাত্র আল্লাহ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন